প্রকাশিত: Fri, Feb 24, 2023 2:16 PM
আপডেট: Thu, Jun 26, 2025 8:13 PM

বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন কবি-লেখক গজিয়ে উঠছে

আহসান হাবিব : ভাষার ব্যবহারের মধ্যদিয়ে কথকের মনস্তত্ত্ব ধরা পড়ে। ধরুন একজন কবি কিংবা লেখক সূর্যাস্তের সময়টিকে বললো, ‘মাগরিব’ তখন বুঝতে হবে তিনি নিজের সূক্ষ্ম সাম্প্রদায়িকতা প্রকাশ করে ফেলছেন। কেননা ক্ষণটিকে বোঝাতে বাংলা ভাষায় এর চেয়ে চমৎকার শব্দ আছে, ওই যে বললাম ‘সূর্যাস্ত’। এমন উদাহরণ এখন ভুরি ভুরি। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন কবি-লেখক গজিয়ে উঠছে। 

[খ] আবার অনেকে কথায় কথায় ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করে। অথচ বাংলা ভাষায় তা প্রকাশের উপযুক্ত শব্দমালা আছে। আলিঙ্গনের চেয়ে ‘হাগ’ কিংবা স্প্রুভাতের চেয়ে ‘গুড মর্নিং’ কি উচ্চ ভাষা? এরা আবার সাম্প্রদায়িকতার বিপরীতে নিজেদের অতি আধুনিক হিসেবে দেখাতে চায়। [গ] তার মানে এই নয় বিদেশি শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। অবশ্যই যাবে। বিদেশি শব্দ যেকোনো ভাষাকে সমৃদ্ধ করে। বাংলা ভাষায় বিদেশি শব্দ প্রচুর। আমি বলছি যখন কেউ সচেতনভাবে বিদেশি ভাষা প্রয়োগ করে অথচ তার বাংলা শব্দ আছে, তার কথা। ভারতীয় উপমহাদেশ ভাষার এই সাম্প্রদায়িকতায় আচ্ছন্ন। ‘পানি’ এবং ‘জল’ নিয়ে এখনো চলছে তুমুল হাঙ্গামা। 

[ঘ] আমি যখন বাংলা ভাষার লেখক তখন আমি আমার নিজের ভাষাতেই লিখবো। লেখার প্রয়োজনে যেসব শব্দ বাংলা ভাষায় আত্তীকৃত বা এমনভাবে মিশে গেছে যা ব্যবহারে সড়ঘড় হয়ে গেছে, তা লিখবো। তারপরেও যদি দেখি বাংলা ভাষায় তার প্রতিশব্দ আছে, প্রথম পছন্দ হবে সেটাই। আমি নিশ্চয় এখন চেয়ারের বদলে ‘কেদারা’ বা অক্সিজেনের জায়গায় জোর করে ‘অম্লজান’ ব্যবহার করবো না। [ঙ] কেমন আছেন’ এর উত্তরে এখন প্রায়ই শুনতে হয় ‘আলহামদুলিল্লাহ’! কেন রে বাপু, ‘ভালো আছি’ কিংবা খুব একটা ভালো নেই ভাই’ বলা যায় না? এরকম যারা কথায় কথায় বিদেশি শব্দ বিশেষত আরবি শব্দ ব্যবহার করে, তারা আপাদমস্তক সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন। লেখক: ঔপন্যাসিক